আজ ইন্টারনটের ২৫ তম জন্মবার্ষিকী। পৃথিবী জুড়ে আজ ইন্টারনেটের যে জয়জয়কার চলছে তা সম্ভব হয়েছে সুইটজারল্যান্ডের সার্নের এক প্রতিভাবান কম্পিউটার প্রকৌশলী টিম বার্নার্স লি এর হাত ধরে।
পথ পরিক্রমায় ইন্টারনেট হাঁটি হাঁটি পা পা করে কতদূর এলো এবং সাফল্য কতখানি, তা নিম্নে সংক্ষেপে কিছু দেয়া হলঃ
মার্চ ১২, 1989 সালঃ ব্রিটিশ কম্পিউটার প্রকৌশলী বার্নার্স লি তার “তথ্য ব্যবস্থাপনা প্রস্তাবনা”-টি ইউরোপিয়ান প্রতিষ্ঠান সার্নে জমা দেন। পক্ষান্তরে কিন্তু তিনি আজকের ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন সেদিন। ১৯৯০ সালের ক্রিসমাসে তিনি তার কোড জনসম্মুখে নিয়ে আসেন।
1993 সালঃ মোজাইক, মার্ক অ্যান্ড্রেসেন ও তার দল একটি ওয়েব ইন্টারফেস চালু করেন। কমার্শিয়াল ব্রাউজার নেটস্ক্যাপের মূলভিত্তি হিসেবে মোজাইককে ধরা হয়। এর পদচারনা শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে।
1994 সালঃ চীন সর্বপ্রথম ইন্টারনেটের আওতায় আসে কিন্তু উপাদানগুলো তারা নিজেদের মত করে নিয়ন্ত্রন করতে থাকে।
হোয়াইট হাউজ তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট চালু করে।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের দুনিয়ায় ডেভিড ও জেরির দিকনির্দেশনা চালু করা হয়।
1995 সালঃ মাইক্রোসফট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার চালু করে। প্রকৃতপক্ষে এটি একধরণের অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষনা হয়ে পড়ে অন্যান্য ব্রাউজিং সাইটগুলোর জন্য। ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ধীরে ধীরে নেটস্ক্যাপের গ্রহণযোগ্যতা কমিয়ে দেয় একেবারে।
অনলাইনে কেনাকাটা বা কোন কিছু নিলামে তুলে বিক্রি করবার জন্য সাইট ‘ই বে’ চালু করা হয়।
1996 সালঃ ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান নোকিয়া সর্বপ্রথম বাজারে ইন্টারনেট সেবাদান করতে সক্ষম, এমন মুঠোফোন নিয়ে আসে।
১998 সালঃ গুগল তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিনে রূপান্তরিত হতে থাকে ধীরে ধীরে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ওয়েব ডোমেইন এর নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেয়।
2000 সালঃ ইন্টারনেট ভাইরাস ILOVEYOU কোটি কোটি কম্পিউটারে হানা দিয়ে নানা ধরণের ক্ষতি সাধন করতে থাকে এবং ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ধারণা নিয়ে যায় যে, ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনলাইন সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন।
2001 সালঃ ন্যাপস্টার নামক অনলাইনে গান শোনার জনপ্রিয় সাইটটি কপিরাইট আইনের আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যায়।
2005 সালঃ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় একশ কোটিরও বেশি ছাড়িয়ে যায়।
2007 সালঃ এস্তোনিয়ায় সর্বপ্রথম অনলাইনে নির্বাচন প্রক্রিয়া সংঘটিত হয়।
2012 সালঃ অনলাইনে বাণিজ্য প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সদস্য সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যায়।
নাসা মঙ্গলগ্রহে প্রাণের সন্ধানে একটি প্রোব পাঠায়।
বিশ্বের ৮৯টি দেশের মাঝে একটি চুক্তি সম্পাদিত হয় যার মাধ্যমে বলা হয় যে প্রত্যেকটি দেশের সরকার যাতে তাদের জনগণের ওপর অনলাইনে নজরদারি একটু শিথিল করে। যুক্তরাষ্ট্র সহ ৫৫ টি দেশ এই চুক্তিকে নাকচ করে দেয়।
2013 সালঃ ২.৭ বিলিয়ন পৃথিবীবাসী ইন্টারনেটের সাথে নিজেদের সম্পর্কিত করতে পেরেছে। এটি পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। এ বছরই ভাষার দিক থেকে চীন ইংরেজিকে টেক্কা দিয়ে দেয়।
আশা করা যায় আসন্ন দিনগুলোতেও ইন্টারনেট এভাবেই তার জয়যাত্রা অব্যাহত রাখবে, মানুষের জীবনযাত্রাকে করবে আরো সহজিয়া।